ইলুমিনাতি পর্ব - ৪
ইলুমিনাতি পার্ট -৪ (কার্টুন বনাম ফেতনা)
ছোট থেকে বড় এমন কোন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না যে কার্টুন পছন্দ করে না। কি ছোট কি বড়, কি বুড়ো কি শিশু যে কেউ কার্টুনের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দিতে পারে। কত্ত মজার মজার চরিত্র, দৃশ্য!! শুধুই কি বিনোদনের জন্য এই কার্টুনগুলো দেখানো হয়? নাকি কার্টুনের নামে অন্য কোন
বিষয়েও বাচ্চাদের তৈরি করা হয়? বাচ্চাদের সাবকন্সিয়াস মাইন্ডে কি ইঞ্জেক্ট করা হয়??
আজকালকার বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের জ্বালাযন্ত্রণা থেকে রেহাই পাবার জন্য কার্টুনে অভ্যস্ত করে তোলেন। আমাদের ধারণা কার্টুনই তো, অন্য কিছু তো আর দেখছে না। সাধারণ দৃষ্টিতে সেগুলো শুধু কার্টুনই মনে হবে। আগের পর্বে আপনাদের বলেছিলাম, আমরা কোন জিনিসের ৩০ ভাগ দেখলেও ৩০ ভাগই বুঝে উঠতে পারি না যে আমরা আসলে কি দেখছি। কিন্তু বুঝতে না পারলেও সেটা আমাদের সাবকন্সিয়াস মাইন্ড ঠিকই বুঝে নেয় আমাকে কি দেখানো হচ্ছে বা কি নির্দেশ করা হচ্ছে।
"টম এন্ড জেরি" সবার প্রিয় এবং খুব সম্ভবত এযাবতকাল পর্যন্ত জনপ্রিয়তা শীর্ষে অবস্থান করা অত্যন্ত পরিচিত এক কার্টুন। যারা ইলুমিনাতির ব্যাপারে ইতোমধ্যেই জেনেছেন তারা একটু খেয়াল করলেই এই কার্টুন সিরিজে ইলুমিনাতির কারসাজি ধরতে পারবেন। এ কার্টুনের অনেক এপিসোডেই এক চোখ বিশিষ্ট পিরামিড দেখা যায়। (স্ক্রিনশটে দেখুন)
"ডেথ নোট" নামক একটি জাপানিজ এনিম আছে। এই এনিমটা দেখলে সহজেই বোঝা যায় যে এটি আদম ও হাওয়া (আ:) এর কাহিনী নিয়ে বানানো হয়েছে। এখানে দেখানো হয় এক শয়তান একটি ছেলের( মূল চরিত্র) হাতে একটি লাল আপেল তুলে দিচ্ছে। এরপর আছে দাজ্জালের বাম চোখ। এরপর আরো দেখানো হয়েছে কিভাবে জান্নাত থেকে শয়তানকে ফেলে দেয়া হচ্ছে। ফেলে দেয়ার সময় যাত্রাপথেই সে শয়তানে পরিণত হয়। তার দুটো পাখা গজায় এবং চোখ লাল রঙ ধারণ করে। এরপর দেখানো হয় সেই শয়তান আর ছেলেটা একটা চুক্তি করে যেখানে শয়তান ছেলেটিকে বলছে "তুমি কি আমার আত্মা নিয়ে যেতে এসেছ? তোমরা মানুষরা কি এই কল্পনাই নিয়ে এসেছ যে আমি তোমাদের কিছুই বলবো না?!"..... কি বুঝলেন? এই ইলুমিনাতি এখন আর সিক্রেট নেই। সেই কারণেই তারা এই কথাটিকে ভুল-ভ্রান্তি হিসেবে আমাদের কাছে তুলে ধরছে। সে অস্বীকার করে বলছে যে,সে(শয়তান) তার আত্মা তার সাথে দোজখে নিয়ে যাবে না। যা ধোঁকা ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা এই এনিমটি দেখেছেন তারা জানেন যে এই ডেথ নোট দিয়ে মানুষের প্রাণ হরণ করা হয় এবং শয়তান তাকে এই প্রলোভনটাই দেখিয়েছে যার কারণে ছেলেটি নিজেকে ঈশ্বর ভাবতে শুরু করে।শয়তানটি তাকে ডেথ নোট বা বইটি দিয়ে বলে যে," তোমার যখন মৃত্যু হবে তখন তুমি স্বর্গ বা দোযখ কোথাও যেতে পারবে না, তুমি এই বইতেই বন্দি হয়ে যাবে।" এনিমে দোজখের চিত্রও দেখানো হয়েছে।
এবার আসি কার্টুন নির্মাণকারী ডিজনি কোম্পানীর দিকে। অধিকাংশ কার্টুন এরাই তৈরি করে। ডিজনির লেখার স্টাইলটা লক্ষ্য করুন। ট্রিপল 6 দেখতে পাবেন। যেটি মার্ক অব দ্য বিস্ট। খুবই দুঃখিত আপনাদের সামনে এসব তুলে ধরার জন্য। কিন্তু আপনাদের সতর্ক না করলে আপনারা বুঝতেই পারবেন না আসলে বাচ্চাদের কিভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে সেই "নিউ ওয়ার্ল্ড ওর্ডারের" জন্য। লুকিয়ে লুকিয়েই তারা এইসব সাইন বাচ্চাদের মাথায় ঢুকায়। এর মধ্যে " el diablo" সাইনটা তারা অধিক ব্যবহার করে। (স্ক্রিনশট এ দেয়া)। এগুলো তারা এত্ত বেশি ব্যবহার করে যে আপনাদের সব দেখানো সম্ভব না।
উডি উডুডপেকার কার্টুনের হাঁসটির দিকে লক্ষ্য করুন। এর হাতের সিম্বলটি ইলুমিনাতি সাইন। এবং হাঁসের কপালেও এক চোখ। 'দ্য লায়ন কিং' সেখানেও নোংরা ছবি লুকিয়ে আছে। এই এনিমেশন মুভিতে বেশ কয়েকবার "s Ex" শব্দটা কৌশলে দেখানো হয়েছে। এরপর "আলাদ্দীন" মুভিতেও আছে মার্ক অব দ্য বিস্ট অর্থাৎ 666। মুভির ব্যাকগ্রাউন্ডে একটি হালকা ভয়েস জেসমিনকে (নায়িকাকে) বলছে তার কাপড় খুলতে। আরেকটা সিন তো স্পষ্ট যেখানে ইবলিসের মত সাপের রূপ ধারণ করে চেরাগের জ্বীনটি।
এরপর আছে "লিটল মারমেইড"। এটা পোস্টারেই আছে হিডেন সাইন। পুরো মুভি জুড়েই আছে অনেক "s Ex" ওয়ার্ড। "বিউটি অন দ্য বিস্ট" সেখানেও একই অবস্থা। এবার আপনারা ভাবুন আপনাদের বাচ্চারা এসব দেখছে আর তাদের সামনে বারবার ভাসছে 'sEx'। অবস্থাটা কেমন?? ভবিষ্যতে তাদের আচরণটা কি হবে? এই কার্টুন চরিত্র গুলোকেই আবার ভালোর পাশাপাশি শয়তান রূপেও দেখানো হচ্ছে। এতে বাচ্চারা কি শিখছে? হিডেন মেসেজগুলোর কথা বাদই দিলাম। কার্টুনগুলোর মেয়ে চরিত্রগুলোর পোশাক লক্ষ্য করুন। কতটা স্বল্পবসনা তারা। এতে বাচ্চাদের মেন্টালিটি কিভাবে গড়ে উঠছে?? তারপর আছে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে দেখলেই কার্টুন চরিত্রগুলোর চোখে লাভ সাইন ফুটে ওঠে। এরপর আসে কিসিং মোমেন্ট। কি শিখলো আপনার বাচ্চা! আদারস জেন্ডারের কাউকে দেখলে তার অনুভূতি কি হবে এসব দেখার পর? যে বাচ্চা এসব দেখেই বড় হচ্ছে সেই বাচ্চাকে আপনি কিভাবে বিপরীত জেন্ডারের প্রতি সম্মান,
লজ্জাশীলতা,শালীনতা প্রদর্শন করতে শেখাবেন??? অর্ধেক শরীর মাছের আর অর্ধেক শরীর মানুষের। এগুলো তো ফেরাউনদের রূপ। ফেরাউনরা তাদের কুফরি কাজে এরকম করতো। এবং প্রত্যেকটা ডিজনি মুভি,এনিমেশনেই এসব দেখানো হচ্ছে। আমাদের ইসলামে তো এসব নেই। আছে শালীনতা,লজ্জাশীলতা। আজ এসব দেখে দেখে আমাদের বাচ্চারা কাদের শিক্ষা গ্রহণ করছে?
"বিউটি অফ দ্য বিস্টে' মেয়েটি এক পশুর প্রেমে পড়ে। পুরোপুরিভাবে পশু না আবার। অর্ধেক পশু,অর্ধেক মানুষ! এই হল তাদের শিক্ষা! তারা চায় আমরা শয়তানকে ভালোবাসি। যেখানে কুরআনে আল্লাহ বলে দিয়েছেন শয়তান আমাদের প্রকাশ্য শত্রু। আর তারা আমাদের বলছে শয়তানকে দূরে ঠেলে না দিতে। এরপর আছে "ড্রাগন বলজি" যেখানে একটি ড্রাগনের বল দিয়ে মৃত্যু থেকে ফিরে আসা যায়। যা সম্পূর্ণই ফেতনা। এই ড্রাগন মানে দুই পাখা বিশিষ্ট সাপ ছিল নমরূদের বউএর বাহন। এবং এটি শয়তানের একটি রূপ যা বাইবেলে উল্লেখ আছে বলে জাপানিজরা এই ড্রাগনের উপাসনা করত।
"বেন টেন" এ আছে একটি সিক্রেট মেসেজ। আর সেটি হচ্ছে আবহাওয়া কন্ট্রোল। আমাদের মহানবী (সা:)ও বলেছিলেন,কেয়ামতের একটি নিদর্শন হল দাজ্জাল আবহাওয়ার উপরে তার প্রভাব দেখাবে। আমাদের বোঝা দরকার দাজ্জালের সেইরকম কোন আধ্যাত্মিক ক্ষমতা থাকবে না কিন্তু তার কাছে থাকবে টেকনোলোজি যার মাধ্যমে সে আমাদেরকে তার আয়ত্ত্বে আনবে। আর এটি অবাস্তব কিছু নয়। ইউরোপিয়ান কিছু দেশে এরকম মেশিন বানানো হচ্ছে। তারা যখন চাইবে আবহাওয়া বদলাবে এবং যখন চাইবে বৃষ্টি নামবে। এই কার্টুনে দেখানো হয় কিভাবে এলিয়েনরা তাদের টেকনোলজির মাধ্যমে এসব করছে। আমাদের এখানে তো আর এলিয়েন আসবে না আসবে দাজ্জাল। "টিন টিটান" এ তো সরাসরি এক চোখ বিশিষ্ট দাজ্জাল দেখান হয়েছে। এখানেও দেখানো হচ্ছে দাজ্জালের অনেক টেকনোলোজি থাকবে আর সেই জোরেই সে আমাদের উপর আক্রমণ করবে। আমাদের জেনে রাখা ভালো যে দাজ্জাল শুধু একজন মানুষ নয়,কোন একক ব্যক্তি নয়। এটা একটা সিস্টেমও বটে!!
এরকম আরো অসংখ্য কার্টুন আছে। কিছু কিছু উদাহরণ দিলাম আপনাদেরকে। এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের কি করবেন? বাচ্চাকে বাঁচাবেন নাকি ঠেলে দিবেন দাজ্জালের সম্মুখে? আপনি যদি ভেবে থাকেন বড় হলে এমনিই ঠিক হয়ে যাবে তবে ভুল ভাবছেন। দাজ্জাল এলে হয়তো আমি আপনি থাকবো না,কিন্তু থেকে যাবে আমাদের এই বাচ্চারাই। যে দাজ্জাল আর দাজ্জালের রূপ দেখে দেখে তারা বড় হচ্ছে সেখানে তাদের সামনে দাজ্জাল চাক্ষুষ এসে দাঁড়ালেও তারা বুঝতে পারবে না যে আসলে কি হচ্ছে? সুতরাং সময় থাকতে সাবধান হোন।
No comments