ইলুমিনাতি পর্ব- ৫
ইলুমিনাতি পার্ট- ৫ (বিনোদন নাকি সেটানিজম)
ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট এ আমরা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হিন্দি অর্থাৎ ভারতীয় কালচার দ্বারা। প্রভাবটা এতটাই বেশি যে
, এই কালচারগুলোকে আমরা হাজার বছরের বাঙালিয়ানা বলে চালিয়ে দেই। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত মাতৃভাষা বাংলার থেকেও হিন্দিভাষাকে অধিক প্রেফার ভাবি। কথা-বার্তায়,উৎসবে-আনন্দে এমনকি খোদ মহান মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসটাও উদযাপন করি হিন্দি গানের সুরে সুরে!! এই হিন্দি সংস্কৃতি আমাদের এতটাই গ্রাস করে রেখেছে যে, বিবেকবোধ এতটাই ভোঁতা করে দিয়েছে যে আমরা আমরা চিন্তাও করি না আমরা আদৌ কি শিখছি। বিনোদন নিচ্ছি নাকি শয়তানের ফাঁদে ফেঁসে যাচ্ছি। চলুন একটু দেখে আসি হিন্দি কালচার আমাদের কি শেখাচ্ছে।
⭕-"তুঝমে রব দিখতা হ্যায়, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া কারু? সাজদে সার ঝুকতা হু, ইয়ারা ম্যায় ক্যায়া কারু? (অর্থ তোমার মাঝেই রবকে খুজে পাই আমি, প্রিয়া আমি কি করবো?সেজদার জন্য মাথা ঝুকে যায়, প্রিয়া আমি কি করবো?)
-"খোদা জানে ম্যায় ফিদা হু, খোদা জানে ক্যা বান গায়া হ্যায় তুম মেরে খোদা."(অর্থ: খোদা জানে আমি তোমার ফিদা, খোদা জানে, তুমি হয়ে গেছো আজ আমারি খোদা…)
-"তুহি মেরি সাব হ্যায়, সুবাহ হ্যায়,তুহি দিন হ্যায় মেরা , তুহি ম্যারা রব হ্যায়, জাহান হ্যায়, মেরি দুনিয়া ...(অর্থ: তুমি আমার সবকিছু, আমার সুর্যোদয়, তুমি, দিন তুমি… তুমি আমার রব, আমার পৃথিবী, আমার দুনিয়া তুমি…)
-"তুহি আব মেরা দ্বীন হ্যায়, ঈমান হ্যায়, রাব কা শুকরানা…মেরা কালমা হ্যায় তু, আযান হ্যায়, রাব কা শুকরানা…"(অর্থ: তুমিই এখন আমার দ্বীন, আমার ঈমান, খোদাকে তাই ধন্যবাদ…আমার কালেমা তুমি আযান তুমি, রবকে তাই ধন্যবাদ…)
-"তু ঝে চাহা রাব সে ভি জাদা..ফিরভি না তুঝে..."( তোকে রবের থেকেও বেশি চাই....)
এবার আপনারাই বিবেচনা করুন গানগুলো গাওয়ার পর আপনার ঈমান থাকলো নাকি গেলো? এই গানগুলি একবার হলেও আওড়াননি এমন মানুষ মনে হয় খুব কমই আছে। অথচ এটা স্পষ্ট শিরক। আর শিরক এমন একটি অন্যায় যেটা করলে ঈমান সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যায়, পূর্বের কৃত সকল আমল নষ্ট হয়ে যায়।
⭕এবার একটু হিন্দি সিনেমাগুলোর দিকে নজর দেই। সাম্প্রতিককালে ভারতীয় উপমহাদেশের
হিন্দু-মুসিলম শাসকদের শাসনামল নিয়ে সিনেমা বানানোর হিড়িক পড়ে গেছে প্রতিবেশী দেশে। যার একটা উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হল "পদ্মাবতী" সিনেমাটি। এই সিনেমা নিয়ে কম বিতর্ক হয় নি। কেন এই বিতর্ক, সিনেমাটির মেসেজ কি চলুন একটু বিশ্লেষণ করি। চিতোরের রাণী পদ্মাবতীকে কেন্দ্র করে রাজা রাওয়াররানা রতন সিং এবং সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজীর যুদ্ধকে উপজীব্য করেই এ সিনেমার পটভূমি। যারা দেখেছেন তারা এবার মনে করুন সিনেমায় আলাউদ্দিন খিলজীর চরিত্রায়ন কেমন ছিল? স্বৈরাচারী, নারীলোভী, মদ্যপ,হিংস্র,খুনী,বর্বর এককথায় মানব চরিত্রের এমন কোন খারাপ দিক নেই যা এই চরিত্রে ফুটিয়ে তোলা হয় নি। কিন্তু ইতিহাস কী বলছে? আদৌ কি খিলজী এতটাই খারাপ ছিলেন??
ঐতিহাসিকরা প্রায় সবাই বলেছেন যে, মুভিতে যেভাবে খিলজিকে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুল। ১.সাভেরা আর সোমেশ্বর তার মুভি রিভিউতে বলেন যে, হিন্দু রাজা রতন সিং-কে মুভিতে ভালো হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য তাকে প্রায় সব ক্ষেত্রে সাদা-ক্রিম কালারের সুন্দর-মার্জিত পোশাকে দেখানো হয়েছে যেখানে, খিলজিকে একজন নিষ্ঠুর শাসক হিসেবে দেখানোর জন্য কালো পোষাকে দেখানো হয়েছে এবং আচার-আচরণ ছিলো অনেক বেশি বর্বর এবং অমার্জিত (সোর্স: https://goo.gl/x7mp7W) ২. উত্তরণ দাস গুপ্ত ‘বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ এ লিখা তার প্রবন্ধে বলেন যে, আলাউদ্দিন খিলজিকে মুভিতে যেভাবে পশমের কাপড় ও গোগ্রাসে মাংস খেতে দেখা যায় তাতে তাকে ইন্ডিয়ান খাল দ্রোগো হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। তিনি আরও বলেন যে, ২০ বছর শাসনকালে মঙ্গলদের আক্রমণ কমপক্ষে ৬ বার সফলভাবে প্রতিরোধকারী এই শাসক ছিলেন তাঁর সময়কার একজন অতীব বুদ্ধিমান ও মার্জিত শাসক (সোর্স: https://goo.gl/8nAqVk) ৩. ইতিহাসবিদ রানা সাফভি বলেন যে, মুভিতে খিলজীকে নিষ্ঠুর ও বর্বর হিসেবে দেখানো হয়েছে যাতে করে মুভির নায়ক রানা সিং-কে একজন বিনম্র ও বুদ্ধিমান শাসক হিসেবে উপস্থাপন করা যায়। তিনিও মুভিতে খিলজিকে ভুল ভাবে দেখানো হয়েছে বলে স্বীকার করেন (সোর্স:https://goo.gl/AfVJq9) ৪.শান্তানু ডেভিড বলেন যে, খিলজী নিষ্ঠুর হলেও এমন ধরণের শাসক ছিলেন না যে কিনা শুধুমাত্র একজন নারীর জন্য একটি রাজ্য আক্রমণ করে বসবেন (সোর্স:https://goo.gl/pqM5g5) বুঝতে পারছেন কি যে শুধু খিলজীকে ছোট করার জন্যই এইকাহিনীর অবতারণা!
এবার আসি রাণী পদ্মাবতীর কথায়। ইতিহাসে পদ্মাবতীর অস্তিত্ব কেমন? আদৌ আছে নাকি এটা একটা মিথ?
রানী পদ্মাবতী নিয়ে কথা বলার আগে রানী কর্ণাবতী নিয়ে কথা বলা যাক। চিতোরের রাজা ‘মহারাজা সংগ্রাম সিং’ এর সাথে তার বিয়ে হয় এবং ফলে চিতোরের রানী হিসেবে গণ্য হন। দিল্লী দখলের লক্ষ্যে মহারাজা সংগ্রাম সিং এর নেতৃত্বে হিন্দুদের সম্মিলিত বাহিনীর সাথে সম্রাট বাবরের যুদ্ধ হয় ১৫২৭ সালে, যা খানুয়ার যুদ্ধ নামে পরিচিত। এই খানুয়ার যুদ্ধে হিন্দুদের সম্মিলিত বাহিনী পরাজয় বরণ করে এবং মহারাজা সংগ্রাম সিং ভীষণভাবে আহত হন। ১৫২৮ সালে আহত মহারাজা সংগ্রাম সিং মৃত্যু বরণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর, রানী কর্ণাবতী তার বড় ছেলের হয়ে ক্ষমতার ভার নেন এবং বেশ কয়েক বছর রাজ্য পরিচালনা করেন (সোর্স :Medieval India: From Sultanat to the Mughals Part – II, Satish Chandra) ১৫৩৫ সালে বাহদুর শাহ মেয়র আক্রমণ করলে রানী কর্ণাবতী ও দূর্গের অন্যান্য নারীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে উঠেন এবং বিষ পানে আত্মহত্যা করেন (সোর্স:চেপে রাখা ইতিহাস, গোলাম আহমদ মোর্তজা) আবার এটাও প্রচলিত আছে যে, রানী কর্ণাবতী ও দূর্গের অন্যান্য নারীরা বারুদভর্তি কক্ষে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহুতি দিয়েছিলেন (সোর্সঃEncyclopedia of Indian Events & Dates, S. B. Bhattacherje) হুমায়ূন আহমেদের ‘বাদশাহ নামদার’ গ্রন্থে এই ঘটনার ঊল্লেখ আছে। প্রসঙ্গত, রানী কর্ণাবতীর ছেলে বিক্রামাধিত্যর সাথে ১৫৩২ সালে বাহাদুর শাহর যুদ্ধ হয় যেখানে বিক্রামাধিত্য শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। তাই ১৫৩৫ সালে যখন বাহাদুর শাহর সাথে দ্বিতীয় যুদ্ধে চিতোরের বাহিনী পুনরায় শোচনীয় পরাজয় বরণ করে, তখন রানী কর্ণাবতী ও দূর্গের অন্যান্য নারীরা আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন (সোর্স: Folk Tales of Rajasthan, DINA NATH DUBE)
রানী পদ্মাবতীর কথায় আসা যাক আবার। প্রায় সব বিখ্যাত ইতিহাসবিদ স্বীকার করেছেন যে, সর্বপ্রথম ১৫৪০ সালে মালিক মুহাম্মদ জায়াসির লিখিত পদ্মাবত নামক একটি মহাকাব্যে তাঁর উল্লেখ পাওয়া যায়। এর পূর্বে ইতিহাসে কোথাও তার উল্লেখ পাওয়া যায়নি (সোর্স : https://goo.gl/rk9AZL) এখানেই শেষ নয়,যে ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে এ দ্বন্দ্ব-সন্দেহ; রানী পদ্মিনী কিংবা তার স্বামী রাওয়াররানা রতন সিং অথবা তার কথিত রূপমুগ্ধ সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজি আসলেই কতটা জায়গা দখল করেছে চতুর্দশ শতাব্দীর ইতিহাসে? 'ভ্রুর ভঙ্গি মা হেরি ভুজঙ্গ সকল/ ভাবিয়া চিন্তিয়া মনে গেল রসাতল/ কাননে কুরঙ্গ জলে সফরী লুকিত/ খঞ্জন-গঞ্জন নেত্র অঞ্জন রঞ্জিত'- এঅংশটুকু মধ্যযুগের বাঙালি কবি আলাওলের একটি কাব্য 'পদ্মাবতী' থেকে নেওয়া হয়েছে, যার বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, পদ্মাবতীর ভ্রুভঙ্গি দেখে মৌমাছির দল গভীর চিন্তায় ডুবে গেল। কাজলরাঙা সেই চোখ খঞ্জন পাখির চোখকেও হার মানায়, যা দেখে হরিণরা বনে আর পুঁটি মাছগুলো জলে লুকিয়ে গেল। বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন আলাওলের অনুবাদ কাব্যগ্রন্থ 'পদ্মাবতী'। মালিক মুহম্মদ জায়সী রচিত 'পদুমাবৎ' কাব্যের অনুবাদ এটি। জায়সী তার কাব্য রচনা করেন ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে। প্রায় ১০০ বছর পর আরাকানের বৌদ্ধ রাজার অমাত্য মাগন ঠাকুরের নির্দেশে আলাওল ১৬৪৮ খ্রিস্টাব্দে পদ্মাবতী রচনা করেন। তাই পদ্মাবতী কাব্যের কাহিনীতে ঐতিহাসিক সত্যতা কতটুকু, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সম্ভবত কবিচিত্তের কল্পনাই জায়সী এবং আলাওল দু'জনকেই প্রভাবিত করেছিল। সিংহলের রাজকন্যা পদ্মাবতী, চিতোরের রাজা রতন সিং, দিল্লির সম্রাট আলাউদ্দিন খিলজি, রাজা দেবপাল- এসব চরিত্র নিয়ে রচিত কাল্পনিক কাহিনীর কাব্যরূপ 'পদ্মাবতী'। আর তাই এর ঐতিহাসিক সত্যতা খোঁজা অমূলক। এই একই কথা বলছেন বর্তমানের ইতিহাসবিদরা। কথিত আছে, পদ্মিনীর অসামান্য রূপে মুগ্ধ আলাউদ্দিন খিলজি পাগলপারা হলেও যুদ্ধে স্বামীর মৃত্যুর পর রানী পদ্মিনীর রাজপুত নারীদের ধর্ম মেনে আগুনে ঝাঁপ দিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করেছিলেন। অথচ ত্রয়োদশ শতকের ইতিহাসে পদ্মিনী বা পদ্মাবতীর কোনো উল্লেখই কেউ কোনোদিন পায়নি। ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, 'ইতিহাস আলাউদ্দিন খিলজির অস্তিত্ব স্বীকার করে; চিতোরের রাজা রতন সিংয়েরও। দু'জনের মধ্যে যুদ্ধে রতন সিংয়ের পরাজয় ঘটেছিল। সেটাও ইতিহাস। কিন্তু রানী পদ্মিনীর কোনো অস্তিত্বই কোনো ইতিহাসে নেই। তার কথায়, আলাউদ্দিন খিলজির রাজসভার কবি ছিলেন আমির খসরু। চিতোর আক্রমণের সাক্ষীও তিনি। অথচ তার কোনো লেখাতেও পদ্মিনীর কোনো উল্লেখ নেই! ইরফান হাবিব বলেছেন, পদ্মিনীর প্রথম উল্লেখ ১৫৪০ সালে, সুফি কবি মালিক মোহাম্মদ জায়সীর পদুমাবৎ কাব্যগ্রন্থে। সেখানে পদ্মিনী আবার শ্রীলংকার নারী; রাজপুত নন। ইতিহাসবিদ ব্রজদুলাল চট্টোপাধ্যায় এবং গৌতম ভদ্রও ইরফান হাবিবের সঙ্গে একমত। তাদের কথায়, পুরোটাই লোকগাথা, কল্পনাশ্রয়ী একটি সৃষ্টি; ইতিহাস-সংশ্নিষ্ট নয়। বলা চলে, ঐতিহাসিক কল্পকাহিনী। মজার ব্যাপার হল এই সিনেমাটি নিয়ে সবচে বেশি সোচ্চার হওয়ার কথা ছিল উপমহাদেশের মুসলিমদের। কিন্তু হয়েছে উল্টোটা। কারণ খিলজীর উপর হিন্দুদের ক্ষোভ। ক্ষোভের কারণ হল - দক্ষিন ভারতের বিশাল একটা অংশ আলাউদ্দিন খিলজি জয় করেন, যা মূলত অনেকগুলি হিন্দু রাজ্যের সমষ্টি ছিল। ১৩২০ সালে, আলাউদ্দিন খিলজি যখন মারা যান, তখন খিলজি সম্রাজ্যের সীমানা বেড়ে ভেসেল ষ্টেট সহ তিনগুনেরও বেশি আকৃতি ধারণ করেছিল। অব্যাহত পরাজয়ের কারণে একজন সফল মুসলিম শাসককে উগ্রহিন্দুদের পছন্দ করার কোন কারণ নাই। খিলজির তৈরি করা অর্থনৈতিক সংস্কারের কারণে উচ্চ শ্রেনীর হিন্দুদের কর সংগ্রহ করার ক্ষমতা রহিত করা হয়, ফলে তাদের বিলাসী জীবনযাত্রা ব্যহত হয়। খিলজি তার শাসন আমলের প্রথমদিকে বারবার বিদ্রোহের শিকার হন। তার রাজ্যের ভিতরের মুসলমানরা এবং বাইরের হিন্দুরা বিভিন্ন সময় বিদ্রোহ করে। প্রতিটা বিদ্রোহই আলাউদ্দিন খিলজি সফলভাবে দমন করেন। ভবিষ্যতে যাতে তার বিরুদ্ধে আর বিদ্রোহ না হয়, সেজন্য পয়সাওয়ালা এলিট মুসলিম এবং এলিট হিন্দু শ্রেনীর লোকজনের আর্থিক সক্ষমতা কমানোর জন্য খিলজি বিভিন্ন ধরণের স্কিম হতে নেন, স্পাই নেটওয়ার্ক তৈরী করেন। চিরাচরিত ভাবে উত্তর ভারতের হিন্দু কৃষকদের থেকে হিন্দু জমিদাররা খাজনা আদায় করত। তারা এই খাজনার কিছু অংশ সুলতানকে দিত। এরা কিভাবে কতটা খাজনা আদায় করত তা নিয়ে সুলতান মাথা ঘামাতেন না। কিন্তু সুলতান যখন এদের বিলাসি জীবন দেখলেন, এদের পয়সা বেশি হওয়ার কারণে বারবার নিজেদের মধ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়া এবং সেই সাথে মাঝে মাঝে সুলতানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে আন্জাম দেওয়া - ইত্যাদি সুলতানের নজরে আসল, তখন তিনি এদের কর আদায়ের ক্ষমতা রহিত করে দেন, এবং ভূমি মালিকদের ভূমির পরিমান অনুযায়ি খাজনা নির্ধারণ করে দেন। এতে পয়সাওয়ালা হিন্দু জমিদাররা অনেক বেশি সমস্যায় পড়ে যায় কারণ তাদের জমির পরিমান বেশি হওয়ায় খাজনাও বেশি ছিল। কথিত আছে কর বাড়ানোর সাথে সাথে দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে সেজন্য সুলতানের পক্ষ থেকে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হত। সুলতানের গুপ্তচরেরা বাজারে বাজারে ঘুরে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে কাউকে পন্য বিক্রয় করতে দেখলে কঠোর শাস্তি দিতেন। (সোর্স : উইকিপিডিয়া)
এইরকম আরো একটি মুভি হল "বাজিরাও মাস্তানি"। যেটার কাহিনী একটু ভিন্ন,মেসেজটাও একটু আলাদা-"প্রেম মানে না ধর্মের দোহাই"। প্রেমের আড়ালে হিন্দু-মুসলিম বিদ্বেষ সৃষ্টি। একইভাবে সিক্রেট সুপারস্টার,মাই নেম ইজ খান মুভিগুলোর মেসেজ বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারবেন কিভাবে ইসলাম সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে। আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগছে না যে,এগুলোর সাথে ইলুমিনাতির কি সম্পর্ক? সম্পর্কটি খুব ইজি -'যা খুশী তাই করো,ভালো-মন্দের চিন্তা করো না।' আরেকটু পরিষ্কার করে দিই-
⭕"বিগ বস" খুব জনপ্রিয় একটি হিন্দি রিয়েলিটি শো যেটা পরিচালনা করে থাকে সালমান খান। বিগ বসের লোগোটি খেয়াল করুন। এ বিগ ওয়ান আই ব্যাকগ্রাউন্ড। এই শো'তে কিছু পারফরমেন্স আছে যেমন- একটি ঘরে ১০০ দিন বন্দি থাকা,সেই ঘরের মধ্যে কন্টেস্টদের বিভিন্ন টাস্ক দেয়া (রকেট টাস্ক,ইগলু টাস্ক ইত্যাদি)। এগুলো আসলে খালি চোখে নরমাল টাস্ক,আর আড়ালে সেটানিক টাস্ক।(বিগ বসের সেটানিক সাইনগুলো স্ক্রিনশটে দেখুন) সেটানিজমের একটি রেওয়াজ হল Ritual abuse অর্থাৎ শাস্ত্রীয় অপ আচার-অনুষ্ঠান। সেটানিজমে আসল সৃষ্টিকর্তার পরিবর্তে লুসিফারকে(শয়তান) স্রষ্টা হিসেবে পূজা করা হয়। এবং সেই লুসিফারকে সন্তুষ্ট করার জন্য মানুষদের বিভিন্নভাবে টর্চার করা হয়। সেটানিজমের সদস্যদের তাদের বিশ্বস্ততার প্রমাণস্বরূপ এইসব পরীক্ষা দিতে হয়। যেমন- কখনো তাদের রশি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে মুখ চেপে ধরে জোর করে (ইউরিন,রক্ত) খাওয়ানো হয়,নগ্ন করে শরীরে কাঁটা বিধানো হয়,গরম তরল পদার্থ ফেলে দেয়া হয় এবং সবথেকে ভয়ংকর যেটা সেটা হল মানসিক প্রেসারে ফেলার জন্য তাদের চোখের সামনেই তাদের আপন সন্তান বা অতি প্রিয় কাউকে হত্যা করা হয়। তাদের ভাষায় "আত্মা উৎসর্গ " করে। আর এই পারফরমেন্সগুলো বিগ বসের সিজন ১১র ৫৯ তম দিনে দেখানো হয়েছে। যেখানে সব কন্টেস্টরা এক এক করে একে অপরকে টেবিলে বেঁধে টর্চার করে ঠিক যেভাবে করে সেটানিকরা। এছাড়াও বিগ বসের মূর্তিসদৃশ বসার জায়গাটা লক্ষ্য করুন। এটা আসলে "বাপহমেট টেম্পল"।(স্ক্রিনশট) বিগ বসের সিজন ১০ এর ২৯ তম দিনের পারফরমেন্সে প্রত্যেক কন্টেস্টদের তাদের প্রিয়জনের ছবি বা প্রতীকি আকৃতির (পুতুল) মাধ্যমে হত্যা করে দেখা যায়। অর্থাৎ প্রিয়জনের আত্মা উৎসর্গ কর,সেটানিজমের প্রমাণ দাও। আর বিগ বসের এবারের সিজনে দেখানো হচ্ছে সাপ,পোকামাকড়, বিচ্ছু ভরা বাক্সের ভিতরে কন্টেস্টদের শুয়ে থাকতে। কি ভয়ানক তাই না! সামান্য একটা প্রতিযোগীতায় টিকে থাকার জন্য তাদের কত ত্যাগ,কত টর্চার সহ্য করতে হচ্ছে। এখন একবার ভাবুন তো, কবরের আযাবের কথা। যখন আল্লাহর অবাধ্য হবার কারণে,তার সাথে শিরক করার অপরাধে ঠিক এইভাবেই মাটির নীচে অন্ধকারে শুয়ে থাকা আপনার কোমল শরীরটাকে
সাপ,বিচ্ছু,পোকামাকড় খুবলে খুবলে খাচ্ছে। অনুভব করুন সেইদিনের কথা যেদিন আপনার সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসবে না। এখনও সময় আছে,তাওবা করুন,ফিরে আসুন আল্লাহর পথে। কারণ অতি শীঘ্রই তাওবা কবুলের দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। কারণ দাজ্জাল আসছে..........।
No comments